আমেরিকান ডিফেন্সের লোগোতে প্রযুক্তি ধ্বংসের ইঙ্গিত:

 কাফেররা একই সাথে কালোজাদুর চর্চা ও শয়তানের পূজা করে জীন শয়তানদের মাধ্যমে মিথ্যা মিশ্রিত কিছু ভবিষ্যত বাণী পেয়ে থাকে। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ওরাও কোরআন ও হাদিস থেকেই তথ্য গ্রহণ করে। আমাদেরকে যদিও সত্য জানতে দেয়না। কিন্তু ওরা ঠিকই সেই অনুযায়ী ভবিষ্যত পরিকল্পনা করে। এবং নিজেদের মধ্যে মুভি, গান, উপন্যাস, কার্টুন, বিভিন্ন লোগো ও সাইন সিম্বলের দ্বারা সেই তথ্যগুলো আদান প্রদান করে।

এমনি একটি লোগো হচ্ছে: মার্কিন ডিফেন্স লোগো। এটা ওদের বিভিন্ন অঙ্গসংস্থায় ব্যবহার করে। একেক ডিপার্টমেন্টে একেকরকম ভাবে। এবার লোগোটিতে খেয়াল করুন। ঈগলের পায়ে তীর। কাফেরদের প্রত্যেকটা লোগোর ভিতরেই গোপন বার্তা থাকে। এটাও তার ব্যাতিক্রম নয়। অত্যাধুনিক আমেরিকার ডিফেন্স বাহিনীর লোগোতে তীর বহনকারী ঈগল?? এমনি এমনি নিশ্চই দেয়নি? এবার নিচের হাদীসটি খুব ভালো করে পড়ুন।

 

হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) বলেছেন, ‘এমন একটি পরিস্থিতির উদ্ভব না হওয়া পর্যন্ত কেয়ামত সংঘটিত হবে না, যখন উত্তরাধিকারও বন্টিত হবে না, গনিমতের জন্য আনন্দও করা হবে না এরপর তিনি সিরিয়ায় দিকে আঙ্গুল তুলে এর ব্যাখ্যা প্রদান করলেন বললেন, ‘সিরিয়ার ইসলামপন্থীদের সঙ্গে যুদ্ধ করতে বিরাট এক বাহিনী প্রস্তুতি গ্রহণ করবে ইসলামপন্থীরাও তাদের মোকাবেলায় প্রস্তুত হয়ে যাবে
বর্ণনাকারী বলেন, আমি জিজ্ঞেস করলাম, আপনি কি রোমানদের (খ্রিস্টানদের) কথা বলতে চাচ্ছেন? আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) বললেন, হ্যাঁ, সেই যুদ্ধটি হবে ঘোরতর। মুসলমানরা জীবনের বাজি লাগাবে। তারা প্রত্যয় নিবে, বিজয় অর্জন না করে ফিরব না। উভয়পক্ষ লড়াই করবে। এমনকি যখন রাত উভয়ের মাঝে আড়াল তৈরি করবে, তখন উভয়পক্ষ আপন আপন শিবিরে ফিরে যাবে। কোন পক্ষই জয়ী হবে না। এভাবে একদল আত্মঘাতী জানবাজ শেষ হয়ে যাবে
তারপর আরেকদল মুসলমান মৃত্যুর শপথ নিবে যে, হয় বিজয় অর্জন করব, নয়ত জীবন দিয়ে দিব। উভয়পক্ষ যুদ্ধ করবে।

 রাত তাদের মাঝে আড়াল তৈরি করলে চূড়ান্ত কোন ফলাফল ছাড়াই উভয়পক্ষ আপন আপন শিবিরে ফিরে যাবে।

 এভাবে মুজাহিদদের এই জানবাজ দলটিও নিঃশেষ হয়ে যাবে
তারপর আরেকদল মুসলমান শপথ নিবে। হয় জয় ছিনিয়ে আনব, নতুবা জীবন দিয়ে দিব। তারা যুদ্ধ করবে।

 সন্ধ্যা পর্যন্ত যুদ্ধ চলবে। রাত নেমে এলে উভয়পক্ষই উভয়পক্ষই জয় না নিয়ে শিবিরে ফিরে যাবে।

এই জানবাজ দলটিও নিঃশেষ হয়ে যাবে
চতুর্থ দিন অবশিষ্ট মুসলমানগণ যুদ্ধের জন্য শত্রুর মোকাবিলায় দাঁড়িয়ে যাবে। এবার আল্লাহ শত্রুপক্ষের জন্য পরাজয় অবধারিত করবেন। মুসলমানরা ঘোরতর যুদ্ধ করবে এমন যুদ্ধ, যা অতীতে কখনও দেখা যায়নি। পরিস্থিতি এমন দাঁড়াবে যে, মৃতদের পাশ দিয়ে পাখিরা উড়বার চেষ্টা করবে; কিন্তু মরদেহগুলো এত দূর পর্যন্ত  ছড়িয়ে থাকবে কিংবা লাশগুলো এত দুর্গন্ধ হয়ে যাবে যে, পাখিগুলো মরে মরে পড়ে যাবে। যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সৈন্যদের পরিজন তাদের গণনা করবে। কিন্তু শতকরা একজন ব্যতীত কাউকে জীবিত পাবে না। এমতাবস্থায় গনিমত বণ্টনে কোন আনন্দ থাকবে কি? এমতাবস্থায় উত্তরাধিকার বণ্টনের কোন সার্থকতা থাকবে কি?

পরিস্থিতি যখন এই দাঁড়াবে, ঠিক তখন মানুষ আরও একটি যুদ্ধের সংবাদ শুনতে পাবে, যা হবে এটির চেয়েও ভয়াবহ। কে একজন চিৎকার করে করে সংবাদ ছড়িয়ে দেবে যে, দাজ্জাল এসে পড়েছে এবং তোমাদের ঘরে ঘরে ঢুকে তোমাদের পরিবার পরিজনকে ফেতনায় নিপাতিত করার চেষ্টা করছে। শুনে মুসলমানরা হাতের জিনিসপত্র সব ফেলে  দিয়ে ছুটে যাবে। দাজ্জাল আগমনের সংবাদের সত্যতা যাচাইয়ের জন্য তারা আগে দশজন অশ্বারোহী প্রেরণ করবে। আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, আমি এই দশজন ব্যক্তির নাম, তাদের পিতার নাম, তাদের ঘোড়াগুলোর কোনটির কি রং সব জানি। সে যুগে ভূপৃষ্ঠে যত অশ্বারোহী সৈনিক থাকবে, তারা হবে শ্রেষ্ঠ সৈনিক (সহিহ মুসলিম, খণ্ড , পৃষ্ঠা ২২২৩; মুসতাদরাকে হাকেম, খণ্ড , পৃষ্ঠা ৫২৩; মুসনাদে আবী ইয়ালা, খণ্ড , পৃষ্ঠা ২৫৯)

এই হাদিসে বলা হয়েছে, যুদ্ধ শুধু দিনে লড়া হবে। রাতে কোন যুদ্ধ হবে না। তার অর্থ কি এই যে, এই সব যুদ্ধ পুরানো রীতিতে শুধু তীর আর তরবারি দ্বারা লড়া হবে? রাতে যুদ্ধ না হওয়ার কারণ এছাড়া আর কি হতে পারে?

কারণ আজকের এই আধুনিক যুগে রাতে যুদ্ধ করা কোনো সমস্যা না। এবং তা হচ্ছেও। তাহলে এই হাদিস থেকে তো ওমনটাই ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। অর্থাৎ তীর তরবারির সম্মুখ যুদ্ধ।  আর মার্কিন ডিফেন্সের লোগোতেও একই ইঙ্গিত। আর যাত্রাবাড়ী মাদ্রাসার মাওলানা মাহমুদুল হাসান সাহেবের মুখেও আমি এ কথা শুনেছি। এছাড়াও আরো অনেকেই মনে করেন ঈমাম মাহ্দী ও দাজ্জালের সময়কার যুদ্ধ গুলো প্রাচীন পদ্ধতিতেই হবে। অর্থাৎ আধুনিক অস্ত্রগুলো কোনো কারণে ধ্বংস হয়ে যাবে।  আল্লাহু আলম।

আবার এমনটা নাও হতে পারে। কারণ দাজ্জালের কর্মকান্ডের অনেক কিছুই অত্যাধুনিক প্রযুক্তিগত এক দুনিয়াকেই উপস্থাপন করে। সে সময় অপবিজ্ঞান প্রযুক্তির উন্নয়ন চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছাবে বলেই গবেষণা থেকে প্রতীয়মান হয়। আল্লাহু আলম।



((তবে আসল কথা হল, যুদ্ধ তরবারি দ্বারাই হবে এই মর্মে নিজের পক্ষ থেকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত স্থির করা এবং এই মর্মে হাদিস বর্ণনা করা ঠিক নয় কারণ, নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের যুগে তীর তরবারি দ্বারাই যুদ্ধ হতো এমতাবস্থায় তিনি যদি এমন কোন সরঞ্জামের কথা উল্লেখ করতেন, যা সে সময় বোঝা সম্ভব ছিল না, তাহলে মানুষের মস্তিস্ক প্রকৃত উদ্দেশ্য হতে সরে যেত এবং নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যেটি বোঝাতে চেয়েছেন, মানুষ সেটি যথাযথভাবে বুঝতে ব্যর্থ হতো

আবার এমনও হতে পারে, জুন্দুল্লাহরা একের পর এক আরবের তেলকুপগুলো ধ্বংস করে প্রযুক্তির ব্যবহারকে কঠিন করে তুলবে। যেখানে উভয়পক্ষ বাহন হিসাবে ঘোড়া ব্যবহারে বাধ্য হবে। বর্তমান পশ্চিমা মিডিয়া ইউটিউবের মাধ্যমে জুন্দুল্লাহদের ক্যাম্পের ট্রেনিং এর যে সব ভিডিও প্রকাশ করেছে, অনেক জায়গাতে ঘোড়ায় চড়ার ট্রেনিং দিতে দেখা গেছে

মূল কথা, নিশ্চিতভাবে কিছু বলা ঠিক হবে না।))©)

উপরোক্ত আলোচনায় ঈমাম মাহ্দী দাজ্জালের সময়কালকে সামনে রেখে মার্কিন লোগো এবং ঈমাম মাহদীর  হাদিসের বিষয়টা মিলানোর চেষ্টা করা হয়েছে। অর্থাৎ সেই সময়ের যুদ্ধটা তীর ধনুক দিয়ে হতেও পারে আবার নাও হতে পারে।

এখানে নাহয় আমরা অনিশ্চিত। কিন্তু ইয়াজুজ মাজুজের ব্যাপারে এই লোগোর ইঙ্গিতটা স্পষ্ট হওয়া যায়।



ইয়াজুজ-মাজুজ সম্পর্কে পবিত্র কোরআনের বর্ণনা খুবই সংক্ষিপ্ত তবে হাদিস শরিফ থেকে তাদের সম্পর্কে আরো কিছু তথ্য জানা যায়, যদিও তাদের নিয়ে মানুষের কৌতূহলের শেষ নেই আবদুর রহমান ইবনে ইয়াজিদের বর্ণনা মতে, পৃথিবীর বুকে ছড়িয়ে পড়ার পর ইয়াজুজ-মাজুজ তবরিয়া উপসাগর অতিক্রম করবে ইয়াজুজ-মাজুজ বায়তুল মোকাদ্দাস সংলগ্ন পাহাড় জাবালুল খমরে আরোহণ করে ঘোষণা করবে : আমরা পৃথিবীর সব অধিবাসীকে হত্যা করেছি এখন আকাশের অধিবাসীদের খতম করার পালা সে অনুযায়ী তারা আকাশের দিকে তীর নিক্ষেপ করবে আল্লাহর আদেশে সে তীর রক্তরঞ্জিত হয়ে তাদের কাছে ফিরে আসবে এটা দেখে বোকারা এই ভেবে আনন্দিত হবে যে আকাশের অধিবাসীরাও নিঃশেষ হয়ে গেছে (মাআরেফুল কোরআন)

হাদিস - ১৬৩১

হযরত যায়েদ ইবনে আসলাম তার পিতা হতে বর্ণনা করে বলেন, নিশ্চই রাসূল সা. বলেছেন যে, নিশ্চই ইয়াজুজ মাজুজ বের হবে। তাদের প্রথমজন তাবরিয়ার জলাশয় দিয়ে বের হবে। অতপর তারা তা পান করে ফেলবে। অতপর তাদের শেষজন সেখানে আসবে আর তারা বলবে, কেমন যেন এখানে একবার পানি ছিল। যখন তারা পৃথিবীতে শক্তিশালী হয়ে উঠবে, তখন তারা বলবে আমরা পৃথিবীতে শক্তিশালী হয়েছি, সুতরাং আসো আমরা আসমানবাসীদের সাথে যুদ্ধ করি। তখন সাহাবীগণ প্রশ্ন করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! মুসলমানগণ কোথায় থাকবে? রাসূল সা. উত্তরে বললেন, তারা দূর্গ বানাবে। অতপর আল্লাহ তাআলা মেঘ প্রেরণ করবেন যাকে আনান বলা হয়। আর এরুপ নামই আল্লাহ তাআলার নিকটে। অতপর তারা (উক্ত মেঘ লক্ষ করে) তীর নিক্ষেপ করবে। আর তাদের তীরগুলো রক্তমিশ্রীত অবস্থায় নিচে পড়বে। 

অতপর তারা বলবে, আমরা আল্লাহ কে হত্যা করেছি। অথচ আল্লাহ তাআলাই তাদের হত্যাকারী। অতপর তারা যতক্ষণ আল্লাহ তাআলা চান জীবন যাপন করবে। অতপর আল্লাহ তাআলা মেঘের কাছে অহী পাঠাবেন ফলে মেঘ তাদের উপর উটের নাকের কীটের মতো একপ্রকার কীট বর্ষণ করবে। উক্ত কীটগুলো বের হয়ে তাদের প্রত্যেকের ঘাড়ে ধরবে এবং তাকে হত্যা করে দিবে। তাদের এঅবস্থা যখন হবে তখন মুসলমানদের মধ্য হতে এক ব্যক্তি বলবে, আমার জন্য দরজাটা খুলে দাও, আমি বের হয়ে আল্লাহ শত্রুরা কি করেছে তা দেখবো। হয়তো আল্লাহ তাআলা তাদের ধ্বংস করে দিয়েছেন। অতপর সে বের হয়ে তাদের নিকটে এসে তাদেরকে মৃত দাড়ানো অবস্থায় পাবে। তারা একে অপরের উপরে থাকবে। অতপর সে আল্লাহ তাআলার প্রশংসা করবে এবং তার সাথীদের ডেকে বলবে, আল্লাহ তাআলা তাদের ধ্বংস করে দিয়েছেন। অতপর আল্লাহ তাআলা বৃষ্টি প্রেরণ করে তাদের হতে পৃথিবী ধৌত করবেন। তিনি বলেন, অতপর মুসলমানগণ তাদের তীর ধনুক দিয়ে এত এত বছর আগুণ জ্বালাবে। আর মুসলমানদের জন্তু তাদের মৃতদেহ হতে খাবে। এবং তাদের উপর মোটা তাজা হবে

[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ১৬৩১ ]

 

অর্থাৎ আমরা বুঝতে পারলাম, যদি বিষয়টা (লোগো) দাজ্জালের সময়ের নাও হয়। তবুও ইয়াজুজ মাজুজের তিরকেই নির্দেশ করে। আর তাছাড়া অসংখ্য মুভি ও কার্টুনে তারা তীর ধনুক দিয়ে যুদ্ধকে হাইলাইট করছে । আল্লাহু আলম।






 

 

Comments

Popular posts from this blog

হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে নিউক্লিয়ার বোম ড্রামাঃ

সমতলে বিছানো স্থির পৃথিবী। (১ম -৪র্থ খন্ড)। পিডিএফ লিংক। একসাথে।

আর্মি অফ দাজ্জাল (১ম ও ২য়) খন্ডের PDF লিংক একসাথে: