হজরত যুলকারনাইনের পৃথিবী ভ্রমণ: সম্ভাব্য উদয় ও অস্তাচল:
সূরা কাহাফ অনুযায়ী আমরা জানতে পারি, হজরত জুলকারনাইন পৃথিবীর ৩ দিকে ভ্ৰমণ করেছিলেন।
১) একদম পশ্চিম প্রান্তে অর্থাৎ সূর্যের অস্তাচলে।
২) একদম পূর্ব প্রান্তে অর্থাৎ সূর্যের উদয়াচলে।
৩) উত্তরে, পাহাড়ি গিরিপথে।
আজকে আমরা আল বিদায় ওয়ান নেহায়া এবং তাফসীরে ইবনে কাসীরের আলোকে এই দিক গুলোকে খুঁজে বের করার চেষ্টা করবো, ইনশাআল্লাহ। এক্ষেত্রে ২টা মাপের সহযোগিতা নিবো। একটা হলো আমাদের চেনা জানা মাপের বাহিরে অন্য পৃথিবীর ম্যাপ । আরেকটা হলো আমাদের চেনা সমতল পৃথিবীর জাতিসংঘের ম্যাপ। যদিও এই ম্যাপ গুলো একটাও ইসলামের সাথে পরিপূর্ণ রূপে সামঞ্জস্য পূর্ণ নয়। তবু আপাতত কাজের সুবিধার্থে এই মাপগুলোকেই সামনে রাখতে হবে।
প্রথম ম্যাপ টাকে যদি আমরা ধরি, অর্থাৎ বিশাল বিস্তীর্ণ ওই ম্যাপ। তাহলে আর ভূমি গুলো খুঁজে বের করা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। আল্লাহু আলম বলে ছেড়ে দিতে হবে। কারণ ওখান পর্যন্ত আমাদের জ্ঞান পৌঁছায় নি। ওখানে সূর্যের আওয়াজ পাওয়া যায়, এবং ১২ হাজার দরজা আছে।
আর দ্বিতীয় ম্যাপটা (জাতিসংঘের) যদি নেই তাহলে ভূমি গুলো খুঁজে পাবার একটা সুযোগ আছে।
জুলকারনাইন ভ্রমণ করতে করতে একদম পশ্চিম প্রান্তে চলে গিয়েছিলেন। সেখানে গিয়ে তিনি সূর্যকে কালো পানিতে ডুবে যেতে দেখেছিলেন। এবং এক জাতির দেখা পেয়েছিলেন। ইবনে কাসীর (র) বলেছেন: এটা পশ্চিম আটলান্টিকের খালিদাত দ্বীপপুঞ্জ (হয়তোবা আজকের ওয়েস্ট ইন্ডিজ, অর্থাৎ রেড ইন্ডিয়ান জাতি)। যার পরে আর কোনো ভূমি নেই।
এবার দ্বিতীয় ম্যাপটা ভালো করে দেখুন। ব্রাজিলের দক্ষিণ অংশটুকু পশ্চিম দিকে পড়েছে (ওয়েস্ট ইন্ডিজও এখানে) । আমরা জানি ব্রাজিলে জংলী (নগ্ন) উপজাতি বসবাস করে,
(অনেকটা জুলকারনাইন যেমনটা দেখেছিলেন তেমনি) । সেখানে একটা হ্রদের পানি ফুটন্ত পানির মতো টগবগ করে (হয়তোবা সূর্য ওখানের কর্দমাক্ত পানিতে ডুবে যায়)
।
আর মাশরিক বলতে মূলত ইসলামে মরক্কোকে বুঝানো হয়। আবার মিশরে পিরামিডের মধ্যে দিয়ে সূর্যকে ডুবে যেতে দেখা যায়। তাহলে
কি ব্রাজিলের শেষ প্রান্তটিই সেই ভূমি? আল্লাহু আলম।
এবার চলুন আমরা ২য় দিকে অর্থাৎ সূর্যের উদয়াচলে রওয়ানা দেই।
জুলকারনাইন চলতে চলতে একবারে পূর্ব দিগন্তে সূর্যের উদয়াচলে গিয়ে হাজির হলেন। এবং সেখানে এমন এক জাতিকে পেলেন, যারা সূর্য থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারে না। সূর্য উদয় হলে ওরা পানিতে নেমে যেত। ওদের প্রধান খাবার ছিল মাছ। ওরা এক কান বিছিয়ে, ওপর কান গায়ে দিয়ে ঘুমায় (দুর্বল বর্ণনা) । ওদের শরীরের রং ছিল লাল। ( মজার ব্যাপার হলো মানুষ এই জাতিটাকে ইয়াজুজ মাজুজ
মনে করে, ভুল। ওরা একেবারে পূর্ব প্রান্তের জাতি)। ইয়াজুজ মাজুজ ছিল উত্তর দিকে। এবার আসুন ম্যাপের
সাথে মিলাই। প্রদত্ত ম্যাপ অনুযায়ী সূর্য উদয়ের দেশ হলো অস্ট্রেলিয়া। জাপান নয়। আর অস্ট্রেলিয়াতেও অনেক আদিবাসী আছে যাদের প্রধান কাজ মাছ শিকার। এবং এদের গায়ের রংও লাল। তাহলে আমরা সম্ভাব্য
উদয়াচল পেয়ে গেলাম।
এবার চলুন ৩য় পথে / দিকে। জুলকারনাইন এবার তৃতীয় একটি অঞ্চলে গিয়ে হাজির হলেন। ঐতিহাসিক, গবেষক ও ওলামাদের মত্
হচ্ছে সেটা উত্তর দিক। এক পাহাড়ি গিরি পথ । সেখানে গিয়ে তিনি পেলেন ইয়াজুজ মাজুজ কে।
ইয়াজুজ মাজুজের আলোচনা অনেক করেছি। আর নয়। আশা করি উদয়াচল ও অস্তাচলের ব্যাপারে কিছুটা ধারণা পেয়েছেন। তবে এটা শুধুই আমার গবেষণা। এটাই যে ঠিক, তা বলছি না। ভুল হলে ক্ষমাপ্রার্থী। পথভ্রষ্টতা থেকে আল্লাহর কাছে সাহায্য চাই।
Comments
Post a Comment