উম্মাহর এই ক্রান্তি কালে সৃস্টিতত্ব নিয়ে আলোচনা কতটা যৌক্তিক?


 


সমতল পৃথিবী সম্পর্কে জেনে কি লাভ?

সর্বপ্রথমে আমাদেরকে বর্তমান সময়টাকে ভালো করে বিশ্লেষণ করতে হবে। দেখতে হবে সমস্ত ফেতনার মূলে কে বা কারা আছে? আপনারা সবাই এক কথায় বলবেন, সমস্ত ফেতনার পিছনে জীন, শয়তান, জায়োনিস্ট (ক্রিপ্টো জিউ) দাজ্জাল ও সিক্রেট সোসাইটি আছে।

আমরা এখন শেষ জমানায় আছি। এই মুহূর্তে একটার পর একটা ফেতনা আসতেই থাকবে। মানুষ দিশেহারা হয়ে যাবে। ওলামা হজরতগণও হিমশিম খেয়ে যাবেন। কোনটা ছেড়ে, কোনটা সামলাবেন।

তো, এমন ক্রান্তি কালে সৃষ্টি তত্ত্বের আলোচনাটা কি প্রয়োজনীয়?

উত্তর: অবশ্যই প্রয়োজনীয় কারণ, দাজ্জালের অসংখ্য ফেতনার সাথে সৃষ্টির রহস্য জড়িয়ে আছে আর শেষ জমানায় এমন অনেক ঘটনা ঘটবে, যা সরাসরি সৃষ্টিতত্ত্বের সাথে সম্পর্কিত কোরআনিক কসমোলজি সম্পর্কে আপনার স্পষ্ট ধারণা না থাকলে এক্ষেত্রে আপনি বড় ধরণের ফেতনায় পতিত হবেন এখন আসুন দেখি, কি কি বিষয় দাজ্জালের ফেতনার সাথে জড়িত?

) ভূরাজনীতি (আন্তর্জাতিক রুট ও বিভিন্ন দেশের ভৌগোলিক অবস্থান) বুঝতে হলে আপনাকে সঠিক সৃষ্টি তত্ত্ব বুঝতে হবে

) কাফেররা পৃথিবীকে বলাকার ছোট বলে অনেক সম্পদকে মানুষের কাছ থেকে লুকাচ্ছেআল্লাহর দুনিয়াতে সম্পদের যে অভাব নেই সেটা বুঝতে হলে পৃথিবীর ব্যাপারে সঠিক জ্ঞান থাকতে হবে

) গ্লোবাল ওয়ার্মিং জনসংখ্যা বৃদ্ধির কথা বলে কাফেররা মানুষ হত্যা করতে চাচ্ছে এক্ষেত্রে আপনার পৃথিবীর আকৃতি বিশালতা সম্পর্কে ধারণা থাকা উচিত

) চাদ মঙ্গোল গ্রহে যাওয়ার গল্প শুনিয়ে আর স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের কথা বলে আপনার পকেটের টাকা ভ্যাট ট্যাক্সের নামে সরকারের মাধ্যমে তারা নিয়ে যাচ্ছে আবার আপনাকেই হত্যা করার জন্য ব্যবহার (ফ্রি ভ্যাকসিন পাঠিয়ে বা যুদ্ধ চাপিয়ে) করছে

) ঈমাম মাহ্দী আসার আগে অনেকগুলো প্রাকৃতিক ঘটনা ঘটবে এগুলো ভালো করে বুঝতে হলে সৃষ্টি তত্ত্ব সম্পর্কে ভালো ধারণা থাকা চাই

) পূর্ব দিক থেকে ঈমাম মাহদীর বাহিনী বের হবে এবং বিশাল এক ধোয়া মানুষকে ঘিরে ফেলবে আবার কেয়ামতের আগে একটি আগুন মানুষকে ঐদিক থেকে তাড়িয়ে নিয়ে আসবে উত্তর দিকে ইয়াজুজ মাজুজ আছে ইত্যাদি বিভিন্ন দিকের আলোচনা আছে এখন এই দিকগুলো বুঝতে হলে আপনাকে জিওসেন্ট্রিক কসমোলজি (ভূমিকেন্দ্রিক সৃস্টিতত্ব) বুঝতে হবে বলাকার পৃথিবীতে আপনি দিক খুঁজে পাবেন না আর কম্পাসও কাজ করবে না

) দাজ্জাল সূর্যকে আটকিয়ে দিয়ে একদিনকে একবছর বানিয়ে রাখবে আর এটাতো সূর্য ছোট বলেই সম্ভব হবে সূর্যের আকার অবস্থান সম্পর্কে আপনার যদি সঠিক ধারণা থাকে, তাহলে আপনি এটা দেখে ধোঁকায় পড়বেন না অন্যরাতো দাজ্জালের এই কারিশমা (বিশাল সূর্যকে থামিয়ে দেয়া) দেখে ঈমান হারাবে

) হাদিসে স্পষ্ট করে বলা আছে: কেমামতের আগে সূর্য পশ্চিম থেকে উদয় হবে কিন্তু আপনার যদি স্থির সমতলে বিছানো পৃথিবী সম্পর্কে ধারণা না থাকে, তাহলে আপনি অপবিজ্ঞানের সাথে তাল মিলিয়ে বলবেন, আহ্নিক গতি পরিবর্তন হয়ে পৃথিবী উল্টা ঘুরবে এই ধারণাটা হাদিসের সাথে সাংঘর্ষিক

) ঈসা (:) আকাশ থেকে নেমে আসবেন ঘূর্ণায়মান বলাকার পৃথিবীতে উনি কিভাবে নামবেন? স্থির সমতলে বিছানো পৃথিবীতে নামা সম্ভব

১০) মানুষের পাপাচার জীন শয়তানের উৎপাতের কারণে উল্কা নিক্ষেপ (এস্ট্রয়েড) বেড়ে যাবে এখন বেড়েছেও আর অপবিজ্ঞানীরা নাসার মাধ্যমে এসব ব্যাপারে মিথ্যা কথা বলে আপনাদেরকে ধোঁকা দিচ্ছে তাই আপনাকে আসমান, জমিন, চাদ, তারা সূর্য সম্পর্কে সঠিক এলম অর্জন করতে হবে

১১) কাফেররা আপনাকে চাদ মঙ্গলে যাওয়ার স্বপ্ন দেখায় আপনার যদি সৃষ্টি তত্ত্ব সম্পর্কে সঠিক ধারণা থাকে তাহলে আপনি এই ফাদেঁ পা দিবেন না অদূর ভবিষ্যতে নাসা প্রেমী মানুষ গুলো এসব কাল্পনিক জায়গায় প্লট বুকিং দিয়ে নিজের সম্পদ হারাবে আপনি তখন হাসবেন কারণ আপনি এসব কল্পকাহিনী সম্পর্কে অবগত

১২) নাস্তিকদের উদ্ভট সব কথায় বিভ্রান্ত হবেন নাযেমন বিগ ব্যাং থিওরিএটার মূল প্রতিপাদ্য হচ্ছে, এক বিশাল বিস্ফোরণ থেকে আসমান জমিন একা একাই সৃষ্টি হয়ে গেছেকিন্তু আপনি খুব ভালো করেই জানেন যে এটা একটা ভুয়া তত্ত্বকারণ আল্লাহ তায়ালা সুশৃঙ্খলার সাথে দিনে আসমান জমিন এর ভিতরের প্রয়োজনীয় জিনিস গুলোকে বানিয়েছেন

১৩) মোট কথা স্থির সমতলে বিছানো পৃথিবী সম্পর্কে জানলে কাফেরদের অনেক গুলো ষড়যন্ত্রের কথা আপনি জানতে পারবেনএবং ভবিষ্যতে আর ধোঁকায় পড়বেন নাএছাড়া ঈমানও আরো বেশি মজবুত হবেইসলামের প্রতি আপনার মন আরো বেশি শ্রদ্ধাশীল হয়ে উঠবে, ইনশাআল্লাহতখন ইসলামকে কোরআন, হাদিস ইজমা কিয়াস দিয়ে বুঝতে চাইবেনযুক্তি বা অপবিজ্ঞান দিয়ে নয় 

আপাতত এগুলোই মনে ছিল এছাড়াও আরো অসংখ্য ফেতনা আছে যা সরাসরি সৃষ্টি তত্ত্বের সাথে সম্পর্কিত আপনারা যখন গভীর ভাবে স্টাডি করবেন, তখন আপনারা নিজেরাই বুঝতে পারবেন ইনশাআল্লাহ

 

বি: দ্রঃ কারো দ্বীনি কাজকেই ছোট করে দেখা ঠিক নয় প্রত্যেকের কাজকেই সম্মানের দৃষ্টিতে দেখা চাই সবাই তো আর সব নিয়ে কাজ করতে পারবে না কেউ উম্মাহকে লড়াইয়ের ব্যাপারে সতর্ক করবে কেউ রুকিয়ার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে কেউ মাছালা নিয়ে কেউ দেশের অভ্যন্তরীন ইস্যু নিয়ে কেউ সিক্রেট সোসাটিই, কেউবা সৃষ্টি তত্ত্ব নিয়ে আলোচনা করবে

আল্লাহ তায়ালা আমাদের সকলের প্রচেষ্টা গুলোকে কবুল করে নিন

সুতরাং কথা না বলা চাই, উম্মাহর এই বিপদে সৃষ্টি তত্ত্ব নিয়ে পরে থাকা অযৌক্তিক উপরের আলোচনা থেকে তো আপনারা খুব ভালো করেই বুঝে নিলেন যে, বরং দাজ্জালের ফেৎনাকে গভীর ভাবে বুঝতে হলে স্থির সমতলে বিছানো জিওসেন্ট্রিক কসমোলজি (ভূকেন্দ্রিক সৃস্টিতত্ব) বুঝাটা কত জরুরিআশা করি আপনাদের খুব কমন প্রশ্ন দুটোর উত্তর পেয়েছেনঅর্থাৎ উম্মতের এমন সংকট মুহূর্তে এই আলোচনা কতটা যৌক্তিক আর এগুলো জেনেই বা আপনার কি লাভ?

আর আপনারাও এগুলো নিয়ে একটু ঘাটা ঘাঁটি করুন তাহলে আপনাদের এলম আরো মজবুত হবে আমাদের কথা বিশ্বাস করতেই হবে তা নয় আপনারা নিজেরাও যাচাই করুন  সত্য বাস্তবতার সাথে আমাদের কথা গুলো মিলিয়ে দেখুন প্রয়োজনে এস্তেখারা নামাজ পরে আল্লাহর সাথে পরামর্শ করে নিন তাহলে কেউ আপনাকে গোমরাহ করতে পারবেনা, ইনশাআল্লাহ


Comments

Popular posts from this blog

হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে নিউক্লিয়ার বোম ড্রামাঃ

সূর্য, পৃথিবী থেকে ছোট:

সমতলে বিছানো স্থির পৃথিবী। (১ম -৪র্থ খন্ড)। পিডিএফ লিংক। একসাথে।